শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি রোগীদের জন্য নেবুলাইজার (Nebulizer) একটি অপরিহার্য চিকিৎসা যন্ত্র। এটি ওষুধকে তরল আকার থেকে সূক্ষ্ম কণায় রূপান্তর করে ফুসফুসে সরাসরি পৌঁছে দেয়, ফলে রোগী সহজে শ্বাস নিতে পারেন। বর্তমান সময়ে অনেক পরিবারেই নেবুলাইজার ঘরে রাখা হচ্ছে, বিশেষ করে যাদের বাসায় ছোট শিশু, বয়স্ক মানুষ বা দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসজনিত রোগী আছেন।
নেবুলাইজার মেশিন ঘরে রাখা কেন জরুরী?
১. জরুরি মুহূর্তে সাহায্য
হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে বা হাঁপানির অ্যাটাক এলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই প্রাথমিক সেবা দিতে নেবুলাইজার খুবই কার্যকর।
২. শিশু ও বয়স্কদের জন্য সহজ ব্যবহার
শিশু বা বৃদ্ধদের ইনহেলার সঠিকভাবে ব্যবহার করতে অসুবিধা হয়। কিন্তু নেবুলাইজার সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং কার্যকরভাবে ওষুধ ফুসফুসে পৌঁছে দেয়।
৩. ঘরে বসে চিকিৎসার সুবিধা
প্রতিবার শ্বাসকষ্ট হলে হাসপাতালে যাওয়ার ঝামেলা ও খরচ কমে যায়। ঘরে বসেই চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব।
৪. দীর্ঘমেয়াদি রোগ নিয়ন্ত্রণ
যাদের অ্যাজমা, সিওপিডি (COPD), ব্রঙ্কাইটিস বা অ্যালার্জিজনিত শ্বাসকষ্ট আছে, তারা নিয়মিত নেবুলাইজার ব্যবহার করে শ্বাসতন্ত্র নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।
নেবুলাইজার মেশিনের সঠিক যত্ন
নেবুলাইজারের কার্যকারিতা বজায় রাখতে নিয়মিত পরিষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি।
১. প্রতিবার ব্যবহারের পর ধোয়া
- মাস্ক, মাউথপিস ও মেডিসিন কাপ কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিন।
-
ডিটারজেন্ট ব্যবহার না করে অল্প সাবান পানি ব্যবহার করতে পারেন।
২. জীবাণুমুক্ত রাখা
- সপ্তাহে অন্তত ২ বার ফুটানো পানি বা মেডিক্যাল জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে নেবেন।
-
জীবাণুমুক্ত করার পর অবশ্যই শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন।
৩. মেশিনের যত্ন
- কম্প্রেসর মেশিনটি শুকনো ও ধুলোবালি মুক্ত স্থানে রাখুন।
-
প্রতিবার ব্যবহার শেষে মেশিন ঢেকে রাখুন।
৪. ফিল্টার পরিবর্তন
- মেশিনের এয়ার ফিল্টার নির্দিষ্ট সময় পর পর পরিবর্তন করতে হবে।
-
ফিল্টার ময়লা হলে ওষুধ সঠিকভাবে নেবুলাইজ হবে না।
৫. বিদ্যুৎ নিরাপত্তা
- মেশিন চালানোর সময় ভেজা হাতে স্পর্শ করবেন না।
-
ব্যবহার শেষে প্লাগ খুলে রাখুন।
নেবুলাইজার ব্যবহার করার সময় করণীয়
- ডাক্তার যে ওষুধ নির্ধারণ করেছেন, শুধুমাত্র সেটি ব্যবহার করুন।
-
সঠিক মাত্রায় (dose) ওষুধ ব্যবহার করুন।
-
শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহারের সময় অভিভাবকের উপস্থিতি থাকা জরুরি।
উপসংহার
নেবুলাইজার মেশিন ঘরে রাখা শুধু জরুরি পরিস্থিতিতে সাহায্য করে না, বরং শ্বাসকষ্টজনিত দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার সমাধানেও ভূমিকা রাখে। তবে এর সঠিক যত্ন না নিলে মেশিন অকার্যকর হয়ে যেতে পারে বা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই সচেতনভাবে মেশিন ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ করলে এটি অনেকদিন কার্যকর থাকবে এবং রোগী উপকৃত হবেন।
রোজগার-বিডি.কম Job News, Online Income, Question Bank